রক্তে কোলেস্টেরল বেড়ে গেলে করণীয় - রক্তে কোলেস্টেরল বেড়ে যাওয়ার লক্ষণ

আসসালামু আলাইকুম, সুপ্রিয় পাঠক আজকের এই প্রতিবেদনে আপনাকে স্বাগতম। উপরে টাইটেলটি দেখে আশা করি বুঝতে পারছেন আজকের আলোচনার মূল বিষয় বস্তু আসলে কি?।আজকের আলোচনায় থাকছে রক্তে কোলেস্টেরল বেড়ে গেলে করণীয়(রক্তে কোলেস্টেরল বেড়ে যাওয়ার লক্ষণ) এবং এই বিষয় নিয়ে আরও অন্যান্য প্রশ্নের উত্তর জানতে সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ুন।
রক্তে কোলেস্টেরল বেড়ে গেলে করণীয়
অতিরিক্ত কোলেস্টেরল রক্ত নালিতে জমা হতে হতে একসময় রক্তের স্বাভাবিক ভাবে চলাচলে বিঘ্ন ঘটায়।যার ফলে মানুষের হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোকের মতো ভয়াবহ সমস্যা তৈরি হতে পারে, এটি অনেক সময় মৃত্যুর কারণ হয়ে দাড়ায়। তাই  রক্তে কোলেস্টেরল বেড়ে গেলে করণীয় আমাদের সচেতন হওয়া উচিত। কোলেস্টেরল বেশ কয়েক রকমের হয়ে থাকে যেমন: ট্রাইগ্লিসারাইড,এলডিএল,এইচডিএল এবং টোটাল কোলেস্টেরল।

পোস্টের সূচিপত্র : রক্তে কোলেস্টেরল বেড়ে গেলে করণীয়

রক্তে কোলেস্টেরল বেড়ে গেলে করণীয়

আমরা উপরের শিরোনাম দেখে বুঝতে পারি আজকের আলোচনার বিষয় কি?। তাই চলুন দেরি না করে মূল আলোচনায় ফিরে যাই। এখন আমরা জানবো রক্তে কোলেস্টেরল বেড়ে গেলে করণীয় এবং রক্তে কোলেস্টেরল বেড়ে যাওয়ার লক্ষণ।বর্তমানে অনেক মানুষ রক্তে চর্বির সমস্যায় ভোগে।শরীরে ২ টি উৎস থেকে কোলেস্টরল তৈরি হয়। যেমনঃ
  1.  লিভার থেকে।এটি নিজে দেহের প্রয়োজনমতো কোলেস্টেরল তৈরি করে।
  2.  কোলেস্টরল সমৃদ্ধ প্রাণিজ খাবার থেকে।যেমন:মাছের মাথা, মাংস, দুধ ইত্যাদি।
শরীরে কোলেস্টেরল বেড়ে গেলে স্ট্রোক এর মতো সমস্যা হতে পারে।তাই আমাদের শরীরে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ রাখতে হলে কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন। নিম্নে  রক্তে কোলেস্টেরল বেড়ে গেলে করণীয়পদক্ষেপ তুলে ধরা হলো :
খাদ্যভ্যাস পরিবর্তনঃসুস্থ কর খাবার খেতে হবে যেমন: শাকসবজি,ফল এবং চর্বিযুক্ত খাবার,ফাস্ট ফুড,জাঙ্ক ফুড এড়িয়ে চলতে হবে এছাড়াও অতিরিক্ত চিনির ব্যবহার কমাতে হবে।
ওজন নিয়ন্ত্রণঃ অতিরিক্ত ওজন কমানোর মাধ্যমে শরীরের কোলেস্টেরল কমে যায়।নিয়মিত হাটা,সাইকেল চালানো ইত্যাদির ব্যায়ামের মাধ্যমে শরীরের ওজন কমানো সম্ভব এবং এটি হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
ধুমপান ত্যাগঃ ধুম পান করলে শরীরে কোলেস্টেরল এর পরিমাণ বেড়ে যায় তাই ধুম পান ত্যাগ করা উচিত।
এই পদক্ষেপগুলো অনুসরণ করে শরীরের কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। এই পদক্ষেপ গুলো অনুসরণ করার পরেও যদি কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ সম্ভব না হয় তখন ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

কোলেস্টরল বেড়ে যাওয়ার লক্ষণ

কোলেস্টেরল বেড়ে যাওয়ার জন্য সাধারণত কোন লক্ষণ থাকে না কারণ একটি ধীরে ধীরে শারীরিক ক্ষতি করে এবং রক্তনালি ব্লক হয়ে যায়।কোলেস্টরল অনেক বেশি বেড়ে গেলে হৃদরোগ ও স্ট্রোকের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে তখন কিছু লক্ষণ দেখা যায়।
শ্বাসকষ্টঃ হৃদপিন্ডে ঠিকমতো রক্ত সরবারাহ না হলে শ্বাসকষ্ট দেখা দিতে পারে।
অসুস্থা বা ক্লান্তিঃ উচ্চ মাত্রায় কোলেস্টেরল বেড়ে গেলে শরীরের শক্তি কমিয়ে দিতে পারে যার ফলে অসুস্থতা বা ক্লান্তিবোধ হতে পারে।
হাত-পা সেঁধিয়ে যাওয়াঃ উচ্চ মাত্রায় কোলেস্টেরল বেড়ে গেলে স্ট্রোক হতে পারে যার ফলে হাত-পা সেঁধিয়ে যেতে পারে।
সাধারণত স্ট্রোক বা হৃদ রোগের ফলস্বরূপ হিসেবে উক্ত উপসর্গ গুলো দেখা যায়।কিন্তু কোলেস্টেরল বেড়ে যাওয়ার নিদিষ্ট কোনো লক্ষণ নেই।যদি কখনো উপরের লক্ষণ গুলো দেখেন তাহলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করেন।

কোলেস্টেরল হলে কি কি খাওয়া নিষেধ 

আমরা ইতি মধ্য রক্তে  রক্তে কোলেস্টেরল বেড়ে গেলে করণীয় এবং কোলেস্টরল বেড়ে যাওয়ার লক্ষণগুলো জেনে গেছি। এখন আমরা জানবো রক্তের কোলেস্টেরল হলে কি কি খাওয়া নিষেধ তাই চলুন দেরি না করে জেনে নিই।কোলেস্টেরল হলেও শরীরের এক ধরনের ফ্যাট যা বিভিন্ন শরীরবৃত্তীয় কাজে ব্যবহৃত হয়।কোলেস্ট্রল শরীরের রক্তের সঙ্গে মিশে লিপোপ্রোটিন তৈরি করে এবং তা রক্তে প্রবাহিত হয়। 
রক্তে ফ্যাটের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার কারণে যে সমস্যার সৃষ্টি হয় তখন তাকে হাই কোলেস্ট্রল বলে।অতিরিক্ত কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করতে হলে খাওয়া-দাওয়ার প্রতি নিয়ন্ত্রণ আনতে হবে।নিম্নে কোলেস্টেরল বাড়িয়ে দিতে পারে এমন কিছু খাবারের নাম তুলে ধরা হলো:

  • তেলেভাজা খাবারঃএত তেল যুক্ত খাবার যেমন: চিপস,পোকড়া,ফ্রাইট চিকেন, ফাস্ট ফুড ইত্যাদি।
  • রেড মিটঃ বিশেষ করে চর্বিযুক্ত খাবার গরু, ছাগল ও ভেড়ার মাংস ইত্যাদি রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে।
  •  কেক এবং অন্যান্য মিষ্টান্নঃ  চিনি যুক্ত কেক,পেস্ট্রি,কুকিজ এবং কেন্ডি কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে পারে।
  • অ্যালকোহলঃ অতিরিক্ত অ্যালকোহল খেলে বেড়ে যেতে পারে।এছাড়া অতিরিক্ত লবণ ব্যবহার করলে এ হৃদরোগেরে ঝুঁকে বেড়ে যেতে পারে যা কোলেস্ট্রল নিয়ন্ত্রণে বাধার সৃষ্টি করতে পারে।
  • যথাসম্ভব আমাদের এই খাবারগুলো কম খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে এবং ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

কোলেস্টরল হলে কি কি খাওয়া উচিত

কোলেস্টেরল বেড়ে গেলে এমন কিছু খাবার খাদ্য তালিকায় রাখা উচিত যা কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।নিম্নে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করতে পারে এমন কিছু খাবারের নাম তুলে ধরা হলো:

  • ফাইবারঃ ফাইবার কোলেস্টেরল কমাতে সহায়তা করে।বিনস, লেন্টিল এবং ঢাল ফাইবারের উৎস।
  • ফলঃ বিশেষ করে আপেল, আনারস, পেঁপে,স্ট্রবেরি ইত্যাদি ফলগুলো শরীরের কোলেস্টেরল কমাতে সহায়তা করে কারণ এই ফলগুলোর মধ্যে পেকটিন থাকে যা (LDL) কমাতে সহায়তা করে।
  • মাছঃ বেশ কিছু মাছ আছে যেগুলো খাওয়ার মাধ্যমে আমরা কোলেস্টেরল কমাতে পারি। যেমন: সালমন বা সার্ডিন জাতীয় তৈলাক্ত মাছ করণ এতে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড থাকে।
  • বাদামঃ বিশেষ করে আখরোট। এর মধ্যে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভালো প্রকারের চর্বি থাকে যা কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহয়তা করে।
এছাড়াও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণের জন্য আমাদের ভিটামিন সি এবং অ্যান্টঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার বেশি বেশি খাওয়া উচিত।

কোলেস্টরলল কমানোর ব্যায়াম

কোলেস্টেরল মানার জন্য কিছু ব্যায়াম করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ব্যায়াম করার মাধ্যমে স্বাস্থ্য ভালো রাখা এবং শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা যায়।তাই আমরা কোলেস্টরল কমানোর জন্য কি কি ব্যায়াম করা উচিত সেগুলো জানবো।চলুন জেনে নিই।নিম্নে কোলেস্টরল কমানোর জন্য কিছু ব্যায়াম তুলে ধরা হলোঃ

  • দৌড়ানো বা হাটাঃ প্রতিনিয়তন দৌড়ানো বা দ্রুত হাটা কোলেস্টরল কমানোর জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
  • কার্ডিও ব্যায়ামঃ সাইকেলিং,সাতার কাটা ইত্যাদি হলো এক ধরনের কার্ডিও ব্যায়াম যা শরীরের কোলেস্টরল কমাতে সহায়তা করে।অধীনতা ৩০ মিনিট এই ব্যায়ামগুলো করা ভালো।
  • ওজন তোলাঃ ভারী ওজন তোলার মাধ্যমে শরীরে মাসল তৈরি হয় যা কোলেস্টরল কমাতে সহায়তা করে।
  • ইয়োগোঃ কিছু ইয়োগো আসন করার মাধ্যমে কোলেস্টরল কমানো যায়।যেমন: সেতু আসন,শ্বেত পড়াসন এবং শিরোশাসন।
এছাড়াও একটি স্বাস্থ্যকর জীবনধারা এবং পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম ও মানসিক চাপ কমানো মাধ্যমে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

কোলেস্টরল কমানোর প্রাকৃতিক উপায়

কোলেস্টরল কমানোর কিছু প্রাকৃতিক উপায় রয়েছে।সেগুলো নিম্নে উল্লেখ করা হলো
  • অলিভ অয়েলঃ অলিভ অয়েল প্রাকৃতিক অ্যন্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ।যা শরীরের খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে সহায়তা করে।
  • মশলাঃ আদা,রসুন,হলুদ ইত্যাদি প্রাকৃতিক উপাদান শরীরের কোলেস্টরল কমাতে সহায়তা করে।বিশেষ করে রসুন রক্তের কোলেস্টরল কমাতে সহায়তা করে।
  • পানি পান করাঃ পরিমাণমতো পানি পান করার মাধ্যমে শরীরের কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
  • শরীরে যদি অতিরিক্ত মাত্রায় কোলেস্টরল থাকে তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

লেখকের শেষ মন্তব্য

উচ্চমাত্রায় কোলেস্টরল শরীরে জন্য অত্যন্ত ভয়াবহ তাই আমাদের কোলেস্টরল বাড়ার কারণ গুলো জানতে হবে এবং এর প্রতিরোধ করার জন্য উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। আমাদের এই সমস্যা থেকে রক্ষা পেতে হলে ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে এবং লাইফ স্টাইল পরিবর্তন করতে হবে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url
AB AKASH
AB AKASH
AB AKASH is a skilled Digital Marketing and Content Writing Expert specializing in driving organic growth through Blog SEO and strategic content creation. With a proven ability to translate complex ideas into compelling, high-ranking web content, AB AKASH helps businesses significantly boost their online visibility and engagement. Currently completing his Honours 4th Year in the Department of English at Rajshahi New Government Degree College.thank you.