শিশুর হাঁটা শিখতে দেরি হলে করণীয় - বাচ্চাদের কত মাসে দাঁত উঠে

আমার সকল শুভাকাঙ্ক্ষী ও প্রিয় পাঠক-পাঠিকাদের কে জানায় আসসালামু আলাইকুম। আশা করি আমরা সকলে আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। আজকাল শিশুদের বেড় ওঠা নিয়ে বাবা -মাকে একটু বেশিই সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। তাদের বেড়ে ওঠার প্রত্যেক টা মূহুর্ত অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ, তাই এই সময় তাদের দিকে বিশেষ খেয়াল রাখা উচিৎ। এই জন্যই আজকের পোস্টে আপনাদের জন্য রয়েছে শিশুর হাঁটা শিখতে দেরি হলে করণীয় নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয় সম্পর্কে জানা অজানা তথ্য।
শিশুর হাঁটা শিখতে দেরি হলে করণীয়
শিশুর হাঁটা শিখতে দেরি হলে কি করতে হবে, তাদের হাঁটার ব্যায়াম, হাঁটা শেখার গাড়ি,শিশুর পায়ের সমস্যা, বাচ্চারা কত মাসে হামাগুড়ি দেয়, বাচ্চাদের কত মাসে দাঁত উঠে ইত্যাদি সম্পর্কিত তথ্য নিয়ে আমি হাজির হলাম আপনাদের সামনে। বাচ্চাদের এসব বিষয়ে খেয়াল রাখা যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ সেটা বিস্তারিত পড়লে আপনারা বুঝতে পারবেন। তো আমি দেরি না করে আজকের শিশুর হাঁটা শিখতে দেরি হলে করণীয় নিয়ে আলোচনা শুরু করি।

পোস্টের সূচিপত্রঃ শিশুর হাঁটা শিখতে দেরি হলে করণীয় - বাচ্চাদের কত মাসে দাঁত উঠে

শিশুর হাঁটা শিখতে দেরি হলে করণীয়

একটা শিশু যখন আস্তে আস্তে বাড়তে থাকে তাদের সেই ছোট্ট ছোট্ট মূহুর্ত গুলো প্রত্যেক বাবা মা কে অনেক খুশি দেয়। এ যেন এক সুমধুর স্মৃতি জীবন নামের ছোট্ট অ্যালবামে। একটি শিশু যখন হাঁটা শিখে টল মল পায়ে হাটার সময় হুচুট খেয়ে মুখ থাবড়ে পড়ে তখন সেটা দেখে আম্মু -আব্বুরা অনেক বিচলিত হয়ে পড়েন । শিশুর হাঁটা শিখতে দেরি হলে করণীয় বা কিন্তু বেড়ে উঠার সময় এমনটা হয়েই থাকে। এমন একটু-আর্ধেক না পড়লে কেউ ভালো করে হাঁট তে শিখে না। 

যদি কোনো শিশু হাঁটটে শেখার বয়সটা পার হয়ে যাওয়ার পরে ও আর হাঁটতে শিখে না তখন বাবা- মা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়াটাও অস্বাভাবিক কিছু না। বাচ্চাটি কি কারণে বা কেন হাঁট তে শিখতে দেরি হচ্ছে অথবা কেন হাঁট তে পারছে না সেই বিষয়ে দুশ্চিন্তায় পড়ে তারা অনেক সময় বিশেষজ্ঞ দের পরামর্শ নিয়ে থাকেন। এক্ষেত্রে বেশ কিছু নিয়ম মেনে চললে উপকার হতে পারে। যেমনঃ ওয়াকার কিনে দেওয়া যাবে না, কার্পেট বিছিয়ে দিতে হবে, তেল মালিশ করে দিতে হবে, হাঁটার জন্য উৎসাহিত করতে হবে। অনেক সময় শিশুদের কে ওয়াকার কিনে দেওয়ার পর বাবা- মা নিশ্চিন্ত হয়ে যান। 

কিন্তু দেখা যায় যে এই ধরনের অভ্যাসে শিশুর ক্ষতি হতে পারে। শিশুর হাঁটা শিখতে দেরি হলে করণীয় এই জন্যই তো বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা শিশুদের কে ওয়াকার না কিনে দেওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এর কারণ হলো এক বার যদি ওয়াকার দিয়ে শিশুরা হাঁটা শুরু করে তাহলে পরবর্তী তে ওয়াকার দিয়ে ছাড়া হাঁটতেই চাইবে নাহ। তাই সকলের উচিৎ শিশু কে স্বাভাবিক ভাবেই হাঁটার সুযোগ করে দেওয়া ।শিশুর হাঁটতে শেখার সময় হয়ে গেলে ঘরের মেঝেতে কার্পেট বিছায় দিতে হবে। তাতে করে শিশুটি হাঁটার সময় যদি ও পড়ে যায় তবুও সে ব্যথা পাইবে না। তবে একটু খেয়াল রাখতে হবে যেন কার্পেটটি খুব একটা ভারী না হয়ে যায়। 
তাহলে শিশুর হাঁটা শিখতে দেরি হলে করণীয় বা কিন্তু শিশুটি হাঁট তে গেলে পা পিছলে পড়ে গিয়ে ব্যাথা পেতে পারে।শিশুটির শরীরে দিনে দুই থেকে তিন বার ভালো ভাবে তেল মালিশ করতে হবে। এতে করে শিশুটির পেশিগুলো মজবুত হয়। যার জন্য শিশুরা দ্রুত হাঁট তে শিখবে । শিশুরা হাঁট তে শুরু করিলে তাদেরকে পুরো পুরি ধরে রাখা যাবে না। শুধু মাত্র আপনার কড়ি আঙুলটি তারে ধরতে দিবেন । এতে করে দ্রুত সে নিজ পায়ে ভর দিয়ে হাঁটা শিখবে।

বাচ্চাদের হাটার ব্যায়াম

বাচ্চাদের হাঁটা চলা শেখানোর পাশাপাশি তাদের কে ব্যায়াম ও করাতে হবে। যেমন অনেক সময় তাদের শারীরিক বিকাশের ঘাটতির কারণে ঠিকমতো চলতে পারে না বা হাঁটতে শিখতে অনেক দেরি ও হয়। বিভিন্ন ধরনের প্রাণীর গতিবিধিকে অনুকরণ বা অনুসরণ করাবেন যেমন ধরেন কাঁকড়ার হাঁটা, ভাল্লুক হামা গুড়ি বা ব্যানি হোপস। বাচ্চাদের ব্যায়াম বলতে তাদেরকে দ্রুত মুভ অন করা শেখাতে হবে। বিভিন্ন জিনিসকে অনুকরণ করে চলতে শেখাতে হবে।তাদের এই অনুকরণ অনুসরণ যেন ব্যায়াম আকারে তাদেরকে হাঁটতে চলতে শেখায়।

বাচ্চাদের হাঁটা শেখার গাড়ি

এমন অনেক বাব -মা আছেন যারা জানতে চায় শিশুদের কে বেবি-ওয়াকার কখন দিতে পারবে? বেবিদের ওয়াকার বা হাঁটা শেখার গাড়ি কি সত্যিই তাড়াতাড়ি হাঁটতে শিখতে সাহায্য সহযোগিতা করে? নাকি অন্যকিছু করে?
  • ওয়াকারা বা হাঁটা শেখার গাড়ি শিশুদের দ্রুত হাটতে সাহায্য করে, শিশুদের কে ব্যস্ত রাখতে সাহায্য করে। যখন কাজের প্রতি একটু ব্যস্ততা বেশি থাকবে তখন শিশুকে ওয়াকার দিয়ে রেখে নিশ্চিন্তে কাজ শেষ করে আসতে পারবেন।
  • বাচ্চারা ওয়াকার বা হাটা শেখার গাড়ি ধরে অথবা আপনার হাতটা ধইরা হাঁটিলে তারা হাঁটতে অনেক বেশি উৎসাহিত হবে৷ শিশুরা ওয়াকার ব্যবহারের ফলে দাঁড়ানোর সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ ধারণা পেয়ে থাকে।
  • আট থেকে বারো মাসের শিশুরা নিজেদের আশে পাশের সবকিছুকে এক্সপ্লোর বা ঘুরে দেখতে ভালোবাসে। বাচ্চাদের হাঁটা শেখার গাড়ির মাধ্যমে তারা অন্যেরও সাহায্য ছাড়াও চারপাশের সবকিছুকে Explore করতে শিখছে।
বাচ্চাদের এই হাঁটা শেখার গাড়িটির যেমন ভালো দিক বা সুবিধা রয়েছে ঠিক তেমনি বেশ কিছু অসুবিধাও রয়েছে। যেমন বাচ্চাদের হাঁটা শেখার গাড়ি বা ওয়াকার ব্যবহারের ফলে বাচ্চারা খুব তাড়াতাড়ি নড়াচড়া করে মুভ করতে থাকে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গা তে। এর ফলে তারা বিভিন্ন ভাবে ব্যাথা পেতে পারে বা অনিরাপদ জায়গায় দ্রুত পৌঁছে যায়।

শিশুর পায়ের সমস্যা

শিশুদের বিকাশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হইলো হাঁটতে শিখা। ১ বছর এর মধ্যে বেশির ভাগ শিশুকে হাঁটতে শিখতে দেখা যায়। হাঁটতে শিখার প্রথম দিকে দেখতে পাওয়া যায় যে অনেক বাচ্চারা পায়ের আঙুল এর উপর ভর করে দাঁড়ায় ও সেই ভাবেই হাঁটার চেষ্টা করেন। পা এর গোড়ালীর উপর ভর না দিয়ে আঙুলের উপর ভর দিয়ে দাড়ানাকে বলে ''টো ওয়াকিং"। ২ বছর এর মধ্যে যখন শিশুটি পুরো দমে দৌড়ানোর প্রসেসটা শিখে ফেলে তখন টো ওয়াকিং এর এই অভ্যাসটি আর থাকে না। 
যে সকল শিশুদের টো ওয়াকিং এর অভ্যাস হয়ে যায়, হাঁটতে গিয়ে বার বার পড়ে যায়, তারা পড়ে গিয়েও মাথা সহ আর অনেক জায়গাতে ব্যাথা পাইতে পারে। তখন সে ক্ষেত্রে স্বাভাবিক ভাবে ভারসাম্যটাও ধরে রাখা হয়ে ওঠে না , খেলা-ধুলা অথবা অন্য কাজে অংশ নিতে পারে না, পায়ে জুতা পরতেও অনেক সময় অসুবিধা হয়ে থাকে। যদি কোনো বাচ্চা এমন টো ওয়াকিং এর স্বীকার হয়ে যায় তাহলে ভয় না পেয়ে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন।

বাচ্চারা কত মাসে হামাগুড়ি দেয়

শিশুদের হাঁটা চলা শেখা, হামাগুড়ি দেওয়া, বসতে শেখা যেন একটা অন্য রকমের আনন্দ খুশি বয়ে আনে সকল পিতা মাতার জীবনে। তাদের এই ছোট্ট ছোট্ট মূহুর্ত গুলো সারাজীবন মনে রাখেন বাবা - মায়েরা। ছোট একটা বাচ্চা ছয় থেকে দশ মাস বয়স এর মধ্যেই হামাগুড়ি দেওয়া শুরু করেদেয়। কিছু কিছু শিশু আবার চার মাসের ফাস্টের দিকে হামা গুড়ি দিতে শুরু করে দেয় , 

আবার অন্য দিকে কিছু কিছু বাচ্চারা বারো মাসের পরে ও কিন্তু হামাগুড়ি দেওয়া শিখে পারে না। শিশু বিকাশের প্রথম একটা গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হলো হামাগুড়ি দিতে পারা। শিশুরা যখন হামাগুড়ি দেওয়ার জন্য প্রয়োজন মতো শক্তি সরবরাহ করে নেয় তখন বুঝতে হবে সেই শিশুটি হামাগুড়ি দেওয়ার জন্য প্রস্তুত। শিশুর বিকাশে বাবা- মা ই কিন্তু সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

বাচ্চাদের কত মাসে দাঁত উঠে

বাচ্চাদের দাঁত মূলত ছয় থেকে নয় মাসের মধ্যে উঠা শুরু হইতে পারে। এটি একটি শিশুর তিন নাম্বার জন্ম দিন পর্যন্ত চলতে। আবার অনেক সময় দেখা যায় যে কিছু কিছু বাচ্চাদের দাঁত অনেক দেরিতে উঠে। তাদের শারীরিক বিকাশের ঘাটটির কারণেও এমন হতে পারে। তবে এমন কিছু সন্দেহ থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। বাচ্চাদের সাধারণত দুধি দাঁত এক জোড়া বের হয়। 
এভাবে ২ থেকে ৩ বছর এর মধ্যেই বাচ্চাদের সব গুলো দাঁত ই উঠে যায়। যখন নতুন দাঁত গজাতে শুরু করে তখন সামন্য হলে ও মাড়িতে ব্যাথা করবে। সব শিশুদের তো আর ব্যাথা সহ্য ধৈয্য করার মতোন ক্ষমতা এক নয়। এই জন্যই একেকটি বাচ্চার ক্ষেত্রে দাঁত গজানোর লক্ষণ গুলো ও এক- একেক রকম। এমন সময় বাচ্চাদের মুখের থেকে অনেক লালা ঝরতে দেখা যায়। এই সময়ে তাদের দিকে বিশেষ ভাবে খেয়াল রাখতে হবে।

লেখকের শেষ মন্তব্য

আমরা উপরে বাচ্চাদের হাঁটা চলা, খেলা করা, হাটতে শেখার গাড়ি, ব্যায়াম ইত্যাদি সহ আরো অনেক বিষয় সম্পর্কে আমরা জানলাম। ছোটদের বেড়ে ওঠার উপরেই যেহেতু তাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ লুকিয়ে থাকে তাই আমাদের উচিৎ এই সমটায় বিশেষ খেয়াল রাখতে। বাচ্চারা কোন জিনিসে ব্যাথা পাচ্ছে বা কোন জিনিসের প্রতি তাদের আর্কষণ একটু বেশি সেসব খেয়াল রেখে তাদের সুষ্ঠ ভাবে বেড়ে ওঠার সুযোগ করে দিতে হবে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url
AB AKASH
AB AKASH
AB AKASH is a skilled Digital Marketing and Content Writing Expert specializing in driving organic growth through Blog SEO and strategic content creation. With a proven ability to translate complex ideas into compelling, high-ranking web content, AB AKASH helps businesses significantly boost their online visibility and engagement. Currently completing his Honours 4th Year in the Department of English at Rajshahi New Government Degree College.thank you.