শিশুর ঘুমের জন্য সেরা পদ্ধতি - ‌বাচ্চাদের ঘুম কম হওয়ার কারণ

আসসালামু আলাইকুম, প্রিয় পাঠকবিন্দু সকলকে নতুন প্রতিবেদনে স্বাগতম। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আজকে আমি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করব। আজকে আমাদের আলোচনা বিষয় হচ্ছে শিশুর ঘুমের জন্য সেরা পদ্ধতি গুলো কি।আমরা সকলে জানি একটি শিশু সুন্দর জীবন যাপন ও সুস্থ বিকাশে জন্য ঘুমের প্রয়োজন।
শিশুর ঘুমের জন্য সেরা পদ্ধতি
একটি সুস্থ দেহ সুস্থ মন একটি প্রবাদ বাক্য আছে।তাই সুস্থ বিকাশে জন্য ঘুমের প্রয়োজন। ঘুমের মাধ্যমে শিশুদের মেধা বিকাশিত হয়। এতে শিশুদের মেধা ভালো থাকে এবং সৃতিশক্তি ভালো থাকে।আমরা জানি শিশুদের সুস্থভাবে বেড়ে ওঠা ও মস্তিষ্কের সঠিক বিকাশের জন্য পর্যাপ্ত ও ভালো ঘুম খুব জরুরি। কেন শিশুদের জন্য বেশি ঘুমানো প্রয়োজন আর শিশুদের পর্যাপ্ত ঘুমানো সেরা পদ্ধতি গুলো কি শিশুর ঘুমের জন্য সেরা পদ্ধতি নিয়ে আরও বিস্তারিত আলোচনা করব আমাদের সাথে থাকবেন।

পোস্টের সূচিপত্রঃ শিশুর ঘুমের জন্য সেরা পদ্ধতি - ‌বাচ্চাদের ঘুম কম হওয়ার কারণ

শিশুর ঘুমের জন্য সেরা পদ্ধতি

শিশুদের শারীরিক ও মানসিক এবং সুস্থ সুন্দর জীবনের যাপনের জন্য ঘুম অবশ্য প্রয়োজন। কিন্তু অনেক শিশুরা রাতে ঠিক মতো ঘুমাতে চায় না এজন্য অধিকাংশ বাবা-মা চিন্তিত হয়ে পরি। বেশিরভাগ মা বাবা শিশুদের ঘুম নিয়ে চিন্তিত। ফলে মা বাবা ঘুমাতে চায় না। শিশুর ঘুমের জন্য সেরা পদ্ধতি সন্তানদের না ঘুমালে মা বাবাও ঘুমাতে পারি না। ফলে আমরা বাবা মাকে বাধ্য হয়ে রাত জাগতে হয়। যার ফলে আমরা বাবা মায়ের কাজের ব্যাঘাত ঘটে। কোন কোন সময় হয়তো সন্তানের কান্না থামাতে না পেরে অনেকটা রাগ উঠে যায় । এর কিছু নিয়ম ও অভ্যস অনুসরণ করলে সন্তানের ঘুম নিয়ে বাবা মাকে এমন দুচিন্তা অবস্থায় পড়তে হয় না।এই কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় শিশুর ঘুমের জন্য সেরা পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করব তা বিস্তারিত নিচে দেওয়া হলোঃ
  • ১.শিশুকে ঘুমানোর সঠিক সময় নির্ধারণ করতে হবে। শিশুদের প্রতিদিন রাতে একই সময় ঘুমানো চেষ্টা করাতে হবে। এভাবে রোজ এক সময়ে ঘুম পাড়ালে এটি তাদের অভ্যাসে পরিণত হবে। ফলে শিশুদের পর্যাপ্ত ঘুম হবে।
  • ২.শিশুরা সবসময় আরামদায়ক জিনিস খুঁজে । তাই তাদের ঘুমের জায়গায় আরামদায়ক অবস্থায় রাখতে হবে । তাদের জন্য আরামদায়ক বিছানা নিশ্চত করতে হবে।
  • ৩.শিশুদের সব ধরনের ইলেক্ট্রনিক্স ডিভাইস থেকে নিজেকে দূরে রাখতে হবে সাথে শিশুকেও দূরে রাখতে হবে । কারণ ইলেক্ট্রনিক্স ডিভাইস নিয়ে নিজেকে ব্যস্ত রাখলে শিশুর ঘুমাতে না চাওয়াটা স্বাভাবিক।
  • ৪.শিশু ভয় পায় এমন অদ্ভূত প্রাণীর ছবি শিশুর শয়ন কক্ষ রাখা যাবে না। শিশুদের কোলে করে ঘুম পারালে শিশুদের ভালো ঘুম হয়।
  • ৫.সন্তানকে ঘুম পাড়ানোর জন্য শিশু ঘুমের জন্য সেরাগল্প, গান কিংবা কবিতা আশ্রয় নিতে পারি। এটি খুব কার্যকরী পদ্ধতি। এভাবে রোজ গল্প, গান কিংবা কবিতা শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে যাওয়া তাদের অভ্যাসে পরিণত হবে।
উপরে শিশুর ঘুমের জন্য সেরা পদ্ধতি বিষয় গুলো আমরা শিশুদের জন্য অনুশীলন করতে পারি । আর একটা বিষয় মাথায় রাখতে হবে শিশু ঘুমানোর সাথে সাথে বিছানা কক্ষ ছেড়ে চলে না যায় কিংবা শিশুর কাছ থেকে দূরে সরে না যায়। এতে তাহলে শিশুদের ঘুম ভেঙে যেতে পারে।

বাচ্চা ঘুম কম হওয়ার কারণ

ঘুম শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য। ভালো ঘুম না হওয়া তাদের স্বাস্থ্য নষ্ট হওয়ার অন্যতম কারণ।মানসিকচাপ, শারীরিক অসুস্থতা (অ্যাজমা বা হাঁপানি রোগ, অ্যালার্জি বা চুলকানি রোগ, থাই রয়েডর সমস্যা, হাড় এবং মাংস পেশিতে ব্যথা, গলা-বুকজ্বলা, দাঁত ব্যথা ইত্যাদি রোগে আক্রান্ত হলে শিশুদের ঘুম হয় না। বাচ্চাদের ঘুম কম হওয়ার কারণ আবার অনেক শিশু দিনে বেশি ঘুমায় আর রাত প্রায় ঘুমাই না। এসব শিশুকে নিয়ে বাবা-মায়ের বিড়ম্বনা একটু বেশিই।মূলত নবজাতক শিশুদেরই এই সমস্যাটি বেশি হয়।
কারণ শিশু দীর্ঘদিন মাতৃগর্ভে থাকার কারণে পৃথিবীর আলোতে এসে দিনরাত বুঝতে পারে না। । আর এ কারণেই মূলত নির্ঘুম রাত কাটায় শিশুরা।শরীর খারাপ থাকলে, বিশেষ করে শিশুর পেটে ব্যথা হলে শিশুর ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে।এছাড়া শিশুদের অসুস্থতা কারণে শিশুদের ঘুম হয়।এছাড়া বাচ্চার যদি সর্দির ভাব থাকে বা শরীর খারাপ থাকে, পেটে ব্যথা হলে শিশুদের ঘুমের সমস্যা হয়। শিশুদের ডায়পার ভেজা থাকলে তখন বাচ্চারা অস্বিস্ততে থাকে, এ অবস্থায় সে ঘুম হয় না শিশুদের।

বাচ্চা ঘুমের মধ্যে চমকে উঠে কেন

শিশুদের নরম শরীরে হালকা কিছুর স্পর্শ লাগলেই শিশুরা এক ধরণের সুড়সুড়ির অনুভব করে থাকে । ফলে শিশুরা চমকে উঠে। শিশুদের ঘুমের মধ্যে হাসির প্রথম ও প্রধান কারন হলো ঘুমে স্বপ্ন দেখা। বড়দের মত শিশুরাও ঘুমের মধ্যে স্বপ্ন দেখে থাকে। এটি খুব আশ্চর্যের কোনো বিষয় নয়। যে কোনো বয়সের মানুষই স্বপ্ন দেখতে পারে। শিশুরা যখন স্বপ্নে ভাল বা মজার কিছু দেখে তখন হাসে আবার খারাপ কিছু বা ভয়ের কিছু দেখলে কাঁদে।
স্বপ্নের কিছু কিছু স্বপ্ন শিশুর মনকে খুব আন্দোলিত করে। অনেক সময় ছোট বাচ্চাদের দেখা যায় শিশুদের ঘুমের মধ্যে সুড়সুড়ি দিয়ে হাসতে থাকে। শিশুদের নরম শরীরে হালকা কিছুর স্পর্শ লাগলেই শিশুরা এক ধরণের সুড়সুড়ির অনুভব করে থাকে। ফলে শিশুরা হাসি মুখ করে ঝমকে উঠে। ফলে শিশুরা চমকে উঠে এতে বাবা মায়ের কাছে শিশুদের এসব ছোট খাট বিষয় নিয়ে অনেক চিন্তা করে । এগুলো নিয়ে বাবা মা চিন্তা করার কোন বিষয় না এগুলো শিশুদের মধ্যে হয়ে ঘটে থাকতে স্বাভাবিক।

নবজাতকের ঘুম বেশি হওয়ার কারণ

নবজাতক শিশুরা প্রচুর ঘুমায় কারণ তাদের শরীর ও মস্তিষ্ক দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং উন্নতি করছে। ঘুম তাদের শারীরিক এবং মানসিক বিকাশে সাহায্য করে। আমরা জানি সাধারণত নবজাতকেরা দিনে প্রায় ১৬-২০ ঘন্টা ঘুমাই,তাদের দিন এবং রাতের অনুভূতি নেই। তারা ঘড়ির চারপাশে ঘুমায়, তারা প্রায়শই খাওয়ার জন্য জেগে উঠে। 
বাচ্চাদের ক্ষেত্রে দিনে ঘুম ভাব বেশি থাকার অন্যতম কারণ অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া।এছাড়া শিশুরা সারাক্ষণই ঘুমিয়ে থাকে, তাহলে এটা থাইরয়েডে আক্রান্ত হওয়ার একটি লক্ষণ।কারণ থাইরয়েড গ্রন্থি আক্রান্ত হলে হরমোনের নিঃসরণ স্বাভাবিক থাকে না। ফলে শিশুদের শরীরে শারীরিক ও মানসিক বৃদ্ধি ব্যাহত ঘটে।

বাচ্চা ঘুমের মধ্যে ঝাকুনি কিসের লক্ষণ

ঘুমানোর সময় সাধারণত শিশুদের শরীর শিথিল হয়ে পড়ে। স্বপ্নের সময়ও শরীরের পেশিগুলো শিথিল ও স্থির থাকে। মস্তিষ্ক বাইরের বাস্তব ঘটনা যখন হতে দেখে । কিন্তু ঘুমের শুরুর দিকে স্বপ্ন ও অবাস্তব কিছু ঘটতে দেখলে ঝকুনি দিতে পারে।ঘুমের মধ্যে ঝাকুনি কোনো ক্ষতিকর বিষয় নয়। কিন্তু ঘুম ভেঙে গেলে আর ঘুম হয় না । এছাড়া বিভিন্ন কারণে ঘুমের মধ্যে ঝাকুনি লক্ষণ গুলো দেখা দিতে পারে যেমন অনিয়মিত ঘুম, ক্যাফেইন বা অ্যালকোহল জাতীয়, জিনিস গ্রহণ করা। আমাদের মাথায় রাখতে হবে সবসময় হয় কিনা সবসময় হলে ডাক্তার পরামর্শ নিতে হবে।

বাচ্চা রাতে না ঘুমালে করণীয়

জন্মের পর অনেক নবজাতক ঘুমাতে চায় না। আবার অনেক সময় দেখা যায় কান্নাও করে। এ সময় মা ও পরিবারের সদস্যরা বুঝে উঠতে পারি না।ফলে আমরা মা বাবাদের পরিবারের ঘুম হারাম করার জন্য যথেষ্ট। শিশুদের স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে প্রয়োজন পর্যাপ্ত ঘুম। সন্তানের ঘুম শারীরিক এবং মানসিক বিকাশের ব্যাঘাত ঘটে। এই সমস্যাগুলো থেকে মুক্তি পেতে পারে বাচ্চার খাদ্যাভাসে পরিবর্তন করার মাধ্যমে । এই কয়েকটি বিষয় নিচে দেওয়া হলোঃ যেগুলো সন্তানকে ঘুম পাড়াতে সাহায্য করে।
  • এক গ্লাস গরম দুধ ভালো ঘুম হওয়ার সবচেয়ে কার্যকর উপায়। কেননা এতে রয়েছে
  • ট্রিপটোফ্যান যা সেরোটোনিন এবং মেলাটোনিন উৎপাদনের প্রয়োজনীয় একটি
  • অ্যামিনো অ্যাসিড তৈরি সহায়তা করে।
  • ডিম হচ্ছে উচ্চমানের প্রোটিন ও পুষ্টি সমৃদ্ধ খাদ্য। ট্রিপটোফ্যানের প্রাকৃতিক উৎস, যা এক ধরনের অ্যামিনো অ্যাসিড। ডিমে থাকা এই অ্যামিনো অ্যাসিড, সেরোটোনিন তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
  • কলাতে রয়েছে ট্রিপটোফ্যান এবং ম্যাগনেসিয়ামের এটি ভালো ঘুম হতে সাহায্য করে। ম্যাগনেসিয়াম এর ঘাটতির ফলে ঘুমের সমস্যা দেখা দিতে পারে।এছাড়া ম্যাগনেসিয়ামের অন্যান্য উৎস, যেমন বিভিন্ন ধরনের বাদাম, পালংশাক এই জাতীয় খাবার দিতে পারি।

উপসংহার

উপরোক্ত আলোচনা আমরা জানতে পারি যে একটি শিশু সুন্দর সুস্থ জীবন যাপনে জন্য ঘুম খুবই প্রয়োজন। আমরা একটি শিশু কি মেধা বিকাশিত করতে পারে এবং একটি সুস্থ সুন্দর জীবন করতে পারে।আমাদের প্রত্যেক মা বাবা কে খেয়াল রাখা উচিত। কারণ আমাদের শরীর সুস্থতা নির্ভর করে আমাদের ঘুমের উপর। ঘুম কম হলে শরীরে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এজন্য প্রত্যেক মা বাবা অভিভাবকদের শিশুদের ঘুমের প্রতি লক্ষ্য রাখা উচিত।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url
AB AKASH
AB AKASH
AB AKASH is a skilled Digital Marketing and Content Writing Expert specializing in driving organic growth through Blog SEO and strategic content creation. With a proven ability to translate complex ideas into compelling, high-ranking web content, AB AKASH helps businesses significantly boost their online visibility and engagement. Currently completing his Honours 4th Year in the Department of English at Rajshahi New Government Degree College.thank you.